January 6, 2025, 11:47 pm
আব্দুল আউয়াল
বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি:
নদী নালা খাল বিল সবুজের সমারোহ নিয়ে ছয় ঋতুর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। প্রত্যেক ঋতুর মতো শীতও একটি বৈশিষ্ট্যমন্ডিত এদেশে একটি ঋতু। হেমন্তের প্রস্থানে শীত তার আগমনী বার্তা দেয় । কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় প্রকৃতি। কুয়াশার ফাঁকে সকাল বেলা মিষ্টি রোদের ঝলকানি দেয়। শীতের আগমনীতে টাটকা খেজুরের রসে জমে ওঠে শীতের আমেজ।অতীতে শীতকাল পড়ার সাথে সাথে প্রতি বছর খেজুরের গাছ থেকে রস কাটার ধুম পড়ে যেত গাছিদের মাঝে।প্রত্যেক বাড়িতে সকাল বেলা এক গ্লাস টাটকা খেজুরের রস খাওয়ার জন্য সবাই আগ্রহে থাকত । খেজুরের রস চুলায় জালিয়ে গুড় বানানোর গন্ধে চারদিকে মৌ মৌ করত। গৃহিণীরা খেজুরের রস দিয়ে পায়েস ,পিঠা পুলি বানানোর কাজে ব্যাস্ত সময় কাটাতেন। খেজুরের রস ডোঙায় জাল দিয়ে গুড় বানিয়ে মুড়ির মোয়া তৈরি করে খেত ছোট থেকে বয়স্করা। তবে বর্তমানে এদৃশ্য এখন আর সচরাচর কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে। বরিশালের বানারীপাড়ায় সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের পূর্ব সলিয়াবাকপুর গ্রামের পথিমধ্যে দেখা যায় এক গাছে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার জন্য গাছ কাটছেন। কথা হয় গাছি আব্দুল হাকিম শিকদারের সাথে তিনি বলেন, ৪০ বছর থেকেই আমি এই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ কাজ করার কাজে যুক্ত। এক সময় এই অঞ্চলে কয়েক হাজার গাছ ছিল কিন্তু এখন এই ওয়ার্ডে অল্প কিছু গাছ রয়েছে। আমার সাথে অনেক গাছিরা গাছ কাটত।যা থেকে শত শত হাঁড়ি রস পাওয়া যেত।ঐ সময় রস ছিল খুবই সুস্বাদু।প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছর ২০টি গাছ কাটছি এখন পর্যন্ত। অনেক গাছ মরে গেছে এখন বিক্রি হচ্ছে ইট ভাটায় ও জ্বালানি কাজে। এখন খেজুর গাছ বেশি একটা নাই বললেই চলে। তিনি আরো বলেন, ৪০বছর পূর্বে হাঁড়ি প্রতি রস আট আনা থেকে দশ আনায় বিক্রি করেছি। এখন ৩০০ টাকায় হাঁড়ি বিক্রি করেও পরিবারের দুঃখ ঘোচছেনা।কারণ বর্তমানে অনেক গুলো গাছ কেটে ও রস হয় তিন থেকে চার হাড়ি ।তা থেকে মালিক পক্ষকে অর্ধেক দিয়ে তেমন কোন লাভ হয়না। আজকাল জিনিস পত্রের যে দাম তাতে আমাদের মত গরীব মানুষের কিছু হয়না । কোন মতে বেঁচে থাকা।এ ব্যাপারে বানারীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাহফুজুল রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হয় তিনি বলেন, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি তে আমরা খেজুর গাছ ও তালগাছকেও প্রাধান্য দিয়েছি ।করোনা থাকার কারণে এ দু বছর কাজ একটু থেমে ছিল। তবে এ বিষয়ে আমরা সব সময়েই অবগত আছি। গ্রাম বাংলার খেজুর গাছ রোপণে রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় যদি কেউ গাছ লাগাতে চায় তাহলে আমরা সহযোগিতা করব।
আব্দুল আউয়াল
বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি: